Netaji Subhash Chandra Bose (1897 খ্রিষ্টাব্দ) the greatest person নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু

Netaji Subhash Chandra Bose : In the history of India’s independence movement, Subhash Chandra Bose, better known as Netaji, has shone like a shining star. Netaji Subhash Chandra Bose was a helpless soldier against the British rule. So Netaji Subhash Chandra Bose is a greatest person of India.

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু (Netaji Subhash Chandra Bose) :

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে সুভাষচন্দ্র বসু , যিনি নেতাজি নামেই অধিক পরিচিত , এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের ন্যায় ভাস্বর হয়ে আছেন । ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন একজন আপােসহীন সৈনিক ।

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর রাজনৈতিক জীবন (Political life of Netaji Subhash Chandra Bose):

১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দের ২৩ শে জানুয়ারি ওড়িশার কটকে নেতাজি জন্মগ্রহণ করেন । কিশাের বয়স থেকেই তিনি ছিলেন স্বদেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ। ১৮৯৭ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ জানুয়ারি, বর্তমান ওডিশা রাজ্যের কটক শহরে (ওডিয়া বাজার) জন্মগ্রহণ করেন সুভাষচন্দ্র বসু। তিনি ছিলেন কটক-প্রবাসী বিশিষ্ট বাঙালি আইনজীবী জানকীনাথ বসু ও প্রভাবতী দেবীর চৌদ্দ সন্তানের মধ্যে নবম। ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত সুভাষচন্দ্র একটি কটকের ইংরেজি স্কুলে পড়াশোনা করেন; বর্তমানে এই স্কুলটির নাম স্টুয়ার্ট স্কুল।

এরপর তাকে ভর্তি করা হয় কটকের রাভেনশ কলেজিয়েট স্কুলে। সুভাষচন্দ্র ছিলেন মেধাবী ছাত্র। ১৯১১ খ্রিষ্টাব্দে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় কলকাতা থেকে প্রথম স্থান অধিকার করেন তিনি। ১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে দর্শনে সাম্মানিকসহ বিএ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। বি . এ . পাশ করার পর তিনি ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও চাকরিতে যােগ না দিয়ে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়েন । তিনি প্রথমে কংগ্রেসে যােগদান করেন ও দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের প্রধান সহকারীতে পরিণত হন ।

১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি হরিপুরা কংগ্রেসে সভাপতি নির্বাচিত হন । পরের বছর তিনি ত্রিপুরি কংগ্রেসে পুনরায় সভাপতি নির্বাচিত হলেও গান্ধিজির অসহযােগিতায় সভাপতির পদ ত্যাগ করেন । এরপর তিনি সমমনােভাবাপন্ন ব্যক্তিদের নিয়ে ফরওয়ার্ড ব্লক ’ দল গঠন করেন ( ৩ রা মে , ১৯৩৯ খ্রি )।

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর কর্মজীবন (Netaji Subhash Chandra Bose’s career) :

প্রায় বিশ বছরের মধ্যে সুভাষ চন্দ্র মোট ১১ বার গ্রেফতার হয়েছিলেন। তাকে ভারত ও রেঙ্গুনের বিভিন্ন জায়গায় রাখা হয়েছিল। ১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দে তাকে ইউরোপে নির্বাসিত করা হয়। ১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি (Netaji Subhash Chandra Bose) তার প্রথম প্রেম এমিলি শেঙ্কল-এর সঙ্গে পরিচিত হন ভিয়েনাতে। ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দে তারা ব্যাড গ্যাস্টিনে বিয়ে করেন।

তার পিতার মৃত্যুর পর ব্রিটিশ সরকার তাকে শুধু মাত্র ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালনের উদ্দ্যেশে কিছুক্ষণের জন্য কলকাতায় আসার অনুমতি দেয়। ১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি গান্ধীর বিরোধিতার মুখে ভারতীয় কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি দ্বিতীয় বারের জন্য ত্রিপুরা অধিবেশনে কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হন। এই নির্বাচনে গান্ধী পট্টভি সিতারামায়াকে সমর্থন দেন; নির্বাচনের ফলাফল শোনার পর গান্ধী বলেন “পট্টভির হার আমার হার”। কিন্তু জয়যুক্ত হলেও তিনি সুষ্ঠুভাবে কার্য সম্পাদন করতে পারছিলেননা। 

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর গৃহত্যাগ (Netaji Subhash Chandra Bose left home) :

১৯৪০ খ্রিস্টাব্দের ২ রা জুলাই ব্রিটিশ সরকার তাকে ‘ ভারতরক্ষা আইনে গ্রেপ্তার করে কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে । কারাগারে তিনি অনশন শুরু করলে তার স্বাস্থ্যের অবস্থা উদ্বেগজনক হয়ে উঠলে সুভাষকে সরকার তার নিজ গৃহে অন্তরীণ করে রাখে । নিজ গৃহে অন্তরীণ থাকাকালীন ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দের ১৭ ই জানুয়ারি তিনি অন্তর্ধান করেন । তিনি ওইদিন গভীর রাতে মহম্মদ জিয়াউদ্দিনের ছদ্মবেশে গৃহত্যাগ করে পুলিশের চোখ এড়িয়ে মােটরযােগে গােমাে স্টেশনে আসেন। সেখান থেকে ট্রেনে করে পেশােয়ারে আসেন । সেখান থেকে হেঁটে ভারতীয় সীমানা পেরিয়ে কাবুলে পৌঁছেন । কাবুল থেকে রাশিয়ার মস্কোয় যান। সেখানে রাশিয়ার সাহায্য চাইলেও তা না পাওয়ার সম্ভাবনা থাকায় তিনি বিমানযােগে বার্লিন এসে পৌঁছােন (২৮ শে মার্চ, ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দ )।

১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ জানুয়ারি দিবাগত রাত ১ টা ২৫ মিনিটে পশ্চিমী মুসলমানী পোশাকে তিনি তাঁর এই গোপন যাত্রা শুরু করেন। এই যাত্রায় তিনি তাঁর শিশির বোসকে সাথে নিয়ে মোটর গাড়ি করে কলকাতা ত্যাগ করেন। ১৮ই জানুয়ারিতে কলকাতা থেকে প্রায় ২১০ মাইল দূরবর্তী গোমোতে পৌঁছান। শেষ রাতে ট্রেনযোগে তিনি উত্তর ভারতের দিকে রওনা দেন। এই সময় তিনি ছদ্ম নাম নেন মৌলবী জিয়াউদ্দিন। পেশোয়ার রেলস্টেশনে ফরোয়ার্ড ব্লকের নেতা আকবর শা, সুভাষ বসুর সাথে মিলিত হন এবং এরপর উভয় পরবর্তী পেশোয়ার ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে নেমে পড়েন। তারপর টাঙ্গা গাড়ি করে নিয়ে স্থানীয় তাজমহল হোটেলে উঠেন। এরপর মুসলিম লীগের স্থানীয় নেতা আব্দুল মজিদ খাঁ তাঁকে গোপন আস্তানায় নিয়ে যান।

এরপর সুভাষ বসুকে কাবুল পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া দায়িত্ব নেন ভগৎ সিং। ২১শে জানুয়ারি বিকাল চারটায় সুভাষ বসুর সাথে ভগৎসিং-এর দেখা হয়। পাঞ্জাবের কীর্তি কিষাণ পার্টি বাকি পথটুকু যাওয়ার ব্যবস্থা করেছিল।  আগে যে পথ ধরে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল, সে পরিকল্পনায় কিছু রদবদল করায় ভগৎসিং কিছুটা বিপদে পড়ে গিয়েছিলেন। কারণ পরিবর্তিত পথের সাথে ভগৎসিং ততটা পরিচিত ছিলেন না।

২৫ মার্চ একজন পথ প্রদর্শক পাওয়ায়, সুভাষ বসু আবার যাত্রা শুরু করলেন। সাথে ছিলেন ভগৎ সিং, পথপ্রদর্শক, আবিদ খাঁ ও গাড়ির চালক। এঁরা এই যাত্রাপথে প্রথম থামেন খাজুরি ময়দান-এ। গাড়ির চালক  এবং আবিদ খাঁ এখান থেকে বিদায় নেওয়ার পর বাকি তিনজন পায়ে হেঁটে রওনা দেন। এঁরা রাত ১২টায় আশ্রয় নেন ‘পিশকান ময়না’ নামক গ্রামে। এখানে তাঁরা স্থানীয় একটি মসজিদে আশ্রয় নেন। এই সময় বাইরে  তুষারপাত চলছিল। এরপর সুভাষ বসু খচ্চরের পিঠে চড়ে এবং ভগৎ সিং, পথপ্রদর্শক ও খচ্চরওয়ালা পায়ে হেঁটে রওনা দেন।

জার্মানিতে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর (Netaji Subhash Chandra Bose in Germany) :

জার্মানিতে তিনি হিটলারের সঙ্গে সাক্ষাত করেন । মুসােলিনির সঙ্গেও তার দেখা হয় । ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারি মাসে নাম্বিয়ার নামে একজন ভারতীয়র পরিচালনায় ও জার্মান সরকারের সহযােগিতায় ‘ আজাদ হিন্দুস্থান ‘ বেতারকেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয় । এই বেতারকেন্দ্র থেকে নেতাজি নিয়মিতভাবে ভারতের স্বাধীনতার জন্য প্রচার করতেন । ওই বছরের ডিসেম্বর মাসে তিনি ৪০০ বন্দি ভারতীয় সৈন্যদের নিয়ে স্বাধীন ভারতীয় লিজিয়ন ( Free India Legion ) নামে একটি সৈন্যদল গঠন করেন । এদিকে জার্মানি রাশিয়া আক্রমণ করলে নেতাজি অত্যন্ত মর্মাহত হন । তিনি ( Netaji Subhash Chandra Bose) উপলব্ধি করলেন ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম পরিচালনা করতে হলে জাপানি সহযােগিতা গ্রহণ অধিকতর যুক্তিযুক্ত ও কার্যকরী ।

আজাদ হিন্দ ফৌজ (Azad Hind Fauj) :

এই সময়ে ভারতের বিখ্যাত বিপ্লবী রাসবিহারী বসু জাপানে থেকে দক্ষিণ – পূর্ব এশিয়ার প্রবাসী ভারতীয়দের সাহায্যে ভারতের স্বাধীনতা অর্জনের পরিকল্পনা করেছিলেন । তিনি (Netaji Subhash Chandra Bose) এই উদ্দেশ্যে টোকিও ও ব্যাংককে দুটি সম্মেলন করেন । ব্যাংককের সম্মেলনে ভারতীয় স্বাধীনতা সংঘ (Indian Independence League) গঠন করা হয় (১৫ ই জুন , ১৯৪২ খ্রি)এই সম্মেলনের সিদ্ধান্ত অনুসারে ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ১ লা সেপ্টেম্বর আজাদ হিন্দ ফৌজ ( Indian National Army বা I.N.A. ) প্রতিষ্ঠা করা হয় । ক্যাপ্টেন মােহন সিং হন এর প্রধান সেনাপতি। প্রায় ৪০ হাজার ভারতীয় সেনা এই বাহিনীতে যােগ দেন। ব্যাংকক সম্মেলনেই সুভাষকে দক্ষিণ – পূর্ব এশিয়ায় আসার জন্য আমন্ত্রণ জানানাে হয়।

নেতাজির আজাদ হিন্দ ফৌজ
নেতাজির আজাদ হিন্দ ফৌজ

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর আজাদ হিন্দ ফৌজের দায়িত্ব গ্রহণ(Netaji Subhash Chandra Bose took charge of the Azad Hind Fauj) :

বিভিন্ন কারণে আজাদ হিন্দ বাহিনীর অগ্রগতি আশানুরূপ হয়নি । একদিকে জাপানের অনাগ্রহ , অন্যদিকে মােহন সিংহ ও রাসবিহারী বসুর মধ্যে বিরােধ আজাদ হিন্দ ফৌজের মধ্যে অচলাবস্থার সৃষ্টি করল। এমতাবস্থায় নেতাজি জার্মানির সাহায্যে ডুবােজাহাজে আবিদ হাসানকে সঙ্গী করে বিপদসংকুল পথ পেরিয়ে ৯৭ দিন পর জাপানে পৌঁছেন (১৩ ই মে,১৯৪৩ খ্রি )। জাপানি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সন্তোষজনক আলােচনা করে তিনি ২ রা জুলাই সিঙ্গাপুরে পোঁছােন । সেখানে তাঁকে সাদর অভ্যর্থনা জানিয়ে আজাদ হিন্দ ফেীজের দায়িত্ব তার হাতে দেওয়া হয় । জনতা তাকে নেতাজি ‘ উপাধিতে ভূষিত করেন । ৫ ই জুলাই তিনি আজাদ হিন্দ ফৌজ পরিদর্শন করে তাদের আহবান । জানান “দিল্লি চলাে ‘ , ধ্বনি তােলেন ‘ জয় হিন্দ”।

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর আজাদ হিন্দ বাহিনীর সংগঠন (Netaji Subhash Chandra Bose is an organization of Azad Hind Bahini):

১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দের ২৫ শে আগস্ট নেতাজি আনুষ্ঠানিকভাবে আজাদ হিন্দ ফৌজের সর্বাধিনায়কের পদ গ্রহণ করে সৈন্যদলকে সংগঠিত করতে আত্মনিয়ােগ করেন। সৈনসংখ্যা বৃদ্ধি করে ৫০ হাজার করা হয় যার মধ্যে ২০ হাজার ছিল স্থায়ী সৈন্য। তিনি (Netaji Subhash Chandra Bose) আজাদ হিন্দ ফৌজকে কয়েকটি ব্রিগেডে ভাগ করেন যেমন -গান্ধি ব্রিগেড , নেহর ব্রিগেড , আজাদ ব্রিগেড , সুভাষ ব্রিগেড , নারী সৈন্যদের নিয়ে ঝাসির রানি ব্রিগেড এবং বালক – বালিকাদের নিয়ে বাল – সেনাদল গড়ে তুলেছিলেন।

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর আজাদ হিন্দ সরকার (Netaji Subhas Chandra Bose’s Azad Hind Government) :

১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দের ২১ শে অক্টোবর সিঙ্গাপুরে নেতাজি আজাদ হিন্দ সরকার নামে একটি অস্থায়ী স্বাধীন সরকার প্রতিষ্ঠা করেন। অস্থায়ী সরকার গঠনের পর ত্রিবর্ণরঞ্জিত পতাকা উত্তোলন করে সুভাষচন্দ্র আহবান জানালেন , ‘তােমরা আমায় রক্ত দাও , আমি তােমাদের স্বাধীনতা দেব’। শীঘ্রই জাপান , জার্মানি , ইতালিসহ ৯ টি দেশ এই সরকারকে স্বীকৃতি জানাল। ২৩ শে অক্টোবর আজাদ হিন্দ সরকার ইংল্যান্ড ও আমেরিকার বিরুদ্ধ যুদ্ধ ঘােষণা করল। জাপান তার সহযােগিতার নিদর্শনস্বরূপ ৬ ই নভেম্বর আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ আজাদ হিন্দ সরকারের হাতে প্রত্যার্পণ করল। নেতাজি এই দুটি দ্বীপের নতুন নামকরণ করেন শহীদ দ্বীপ ’ ও ‘ স্বরাজ দ্বীপ ’ ( ৩১ শে ডিসেম্বর )।

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ইম্ফল অভিযান (Imphal campaign of Netaji Subhash Chandra Bose) :

১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারি মাসে নেতাজি রেঙ্গুনে তার বাহিনীর প্রধান সামরিক কার্যালয় স্থাপন করেন । এরপর আজাদ হিন্দ বাহিনীর যুদ্ধাভিযান শুরু হয় । প্রথমে তারা ভারত সীমান্তের মউডাক ঘাঁটিটি ব্রিটিশদের কাছে থেকে দখল করে নেন । এরপর আজাদ হিন্দ বাহিনী মণিপুরের রাজধানী ইল অধিকার করে ( মার্চ ,১৯৪৪ খ্রি) কোহিমা অবরুদ্ধ হল ৮ ই এপ্রিলে । এভাবে আজাদ হিন্দ বাহিনী ভারতীয় এলাকার ১৫০ মাইল এলাকা নিজেদের অধিকারে আনে ।

আজাদ হিন্দ ফৌজের আত্মসমর্পণ ও নেতাজির মৃত্যু (Surrender of Azad Hind Fauj and death of Netaji):

এরপর জাপান ব্রহ্মদেশ থেকে থেকে তার সৈন্য সরিয়ে নিতে বাধ্য হয় । এছাড়া বর্ষা এসে যাওয়ায় খাদ্য ও অশস্ত্রের সরবরাহে বিঘ্ন ঘটায় । ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দের আগস্ট মাসে আজাদ হিন্দ ফৌজ আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয় । নেতাজি ব্রহ্মদেশ থেকে ব্যাঙ্ককে চলে আসেন । সেখান থেকে সিঙ্গাপুর হয়ে সাইখানে আসেন । খবরে প্রকাশিত হয় যে , সাইগন থেকে তিনি একটি জাপানি বিমানে এক অজ্ঞাত স্থান অভিমুখে রওয়া দিলে তাইহােক বিমানবন্দরে ওই বিমান দুর্ঘটনায় তিনি মারা যান (১৮ ই আগস্ট , ১৯৪৫ খ্রি ) । যদিও এ নিয়ে অনেক মতভেদ আছে । তার মৃত্যু আজও রহস্যাবৃত।

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর অন্তর্ধান পর্ব (The disappearance of Netaji Subhash Chandra Bose) :

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি সে সময় গৃহবন্দি ছিলেন। তিনি বুঝতে পারলেন ব্রিটিশরা তাকে যুদ্ধের আগে ছাড়বেনা। তাই তিনি দুটি মামলা বাকি থাকতেই  আফগানিস্তান ও সোভিয়েত ইউনিয়ন  হয়ে  জার্মানি  পালিয়ে যাবার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু আফগানিস্তানের পশতু ভাষা জানা না-থাকায় তিনি ( Netaji Subhash Chandra Bose) ফরওয়ার্ড ব্লকের উত্তর-পশ্চিম সিমান্ত প্রদেশের নেতা মিয়া আকবর শাহকে তার সঙ্গে নেন। যেহেতু তিনি পশতু ভাষা জানতেননা তাই তার ভয় ছিল, আফগানিস্তানবাসীরা তাকে ব্রিটিশ চর ভাবতে পারে। তাই মিয়া আকবর শাহের পরামর্শে তিনি অধিবাসীদের কাছে নিজেকে একজন কালা ও বোবা বলে পরিচিত করান। সেখান থেকে সুভাষ বসু মস্কো গমন করেন একজন ইতালির ‘কাউন্ট অরল্যান্ডো মাজ্জোট্টা’ নামক এক নাগরিকের পরিচয়ে। মস্কো থেকে রোম হয়ে তিনি জার্মানি পৌঁছান। তিনি বার্লিনে মুক্ত ভারতীয় কেন্দ্র (Free India Center) গড়ে তোলেন। 

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু

মূল্যায়নঃ

আজাদ হিন্দ ফৌজ পরাজিত হলেও দেশপ্রেম ও দুঃসাহসের যে নির্দশন তারা রেখেছিল । তা ভারতের মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে ।

( ১ ) ব্রিটিশ সরকার বুঝতে পারে ভারতীয় সেনাদের নিয়ে আর বেশিদিন আধিপত্য বজায় রাখা । সম্ভব নয় । ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এটলি বলেছিলেন ভারতীয় সেনা ও পুলিশ দিয়ে আর ভারতকে শাসন করা যাবে না

( ২ ) নেতাজির ‘ দিল্লি চলাে ‘ ও ‘ তােমরা আমাকে রক্ত দাও , আমি তােমাদের স্বাধীনতা দেব ’ ভারত জুড়ে এক নব উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছিল । আজাদ হিন্দ বাহিনীর শৌর্য ও বীর্য দেশবাসীর মনে প্রবল আশা – আকাক্ষার সৃষ্টি করেছিল।

( ৩ ) এর ফলে দিল্লির লালকেল্লায় আজাদ হিন্দ বাহিনীর বন্দি সেনাদের বিচার শুরু হলে সারা দেশে তীব্র প্রতিবাদের ঝড় ওঠে । প্রবল গণবিক্ষোভে সরকার আজাদ হিন্দ বাহিনীর সৈন্যদের মুক্তি দিতে বাধ্য হয়।

( ৪ ) আজাদ হিন্দ বাহিনীর এই লড়াই ভারতীয় নৌবাহিনীকে অনুপ্রাণিত করেছিল নৌবিদ্রোহ সংঘটিত করতে যা ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এটলিও স্বীকার করেছেন ।

আরও পড়ুনঃ স্বাধীনতা আন্দোলনে মহাত্মা গান্ধীর ভূমিকা

Leave a comment