Panchatantra | পঞ্চতন্ত্রের গল্প সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুন

Panchatantra is a story book. It was composed by Pandit Vishnu Sharma. This book is called Panchatantra because it is composed of five Tantras. The five Tantras are Mitrabheda, Mitraprapti, Kakokiya or Sandhi – Vigraha, Ladhapranash and untested. There is an antecedent to the composition of Panatantra. Immortal power was the king of the city of women in the Deccan. He had three sons – Ugrashakti, Basushakti, Anekshakti.

They were absolutely stupid. So the king was very worried about them. One day the king called the ministers and expressed his concern. The ministers said that in his kingdom there is a scholar named Vishnu Sharma, who is famous and famous in the student community, he will be able to make these three-faced prince a good scholar.

পঞ্চতন্ত্রের গল্প (The story of Panchatantra):


পঞ্চতন্ত্র হল একটি গল্প সাহিত্যের গ্রন্থ। পণ্ডিত বিষ্ণুশর্মা এটি রচনা করেন। পাঁচটি তন্ত্র নিয়ে রচিত বলে এই গ্রন্থের নাম হয়েছে পঞ্চতন্ত্র। পাঁচটি তন্ত্র হল মিত্রভেদ, মিত্রপ্রাপ্তি, কাকোকীয় বা সন্ধি – বিগ্রহ, লধপ্রণাশ ও অপরীক্ষিত কারক। পঞতন্ত্র রচনার একটি পূর্বকাহিনী আছে। দাক্ষিণাত্যের মহিলারােপ্য নগরের রাজা ছিলেন অমরশক্তি তার তিন পুত্র ছিল — উগ্রশক্তি, বসুশক্তি, অনেকশক্তি। তারা একেবারেই মূর্খ ছিল। তাই তাদের নিয়ে রাজার মনে খুব দুশ্চিন্তা ছিল।

একদিন রাজা মন্ত্রীদের ডেকে তার দুশ্চিন্তার কথা জানালেন। মন্ত্রীরা বললেন যে তাঁরই রাজ্যে বিষ্ণুশর্মা নামে এক পণ্ডিত আছেন, যিনি ছাত্রসমাজে যশস্বী ও লন্ধকীর্তি , তিনিই পারবেন এই তিন মূখ রাজপুত্রকে সুপণ্ডিত করে তুলতে। মন্ত্রীদের উপদেশ মত রাজা বিষ্ণুশর্মাকে ডেকে তার দুশ্চিন্তার কথা বললেন এবং প্রতিকারের জন্য তার হাতে তিন পুত্রকে সমর্পণ করলেন। বিষ্ণুশর্মা দেখলেন যে সাধারণ প্রথায় ঐ তিনপুত্রকে শাস্ত্রশিক্ষা দেওয়া যাবে না। তাই তিনি গল্পের ছলে বিভিন্ন শাস্ত্র শিক্ষা দিতে লাগলেন । তারই ফলে রচিত হল উক্ত পাঁচটি তন্ত্র।

“মিত্রভেদ” নামক প্রথম তন্ত্রে ২২ টি গল্প আছে। মূল চরিত্র হল দমনক ও করটক নামক দুই শৃগাল, পিঙ্গলক নামে একটি সিংহ এবং সঞ্জীবক নামে এক বৃষভ। কিভাবে সিংহ ও বৃষভের মধ্যে বন্ধুত্ব নষ্ট হল তা এখানে গল্পের মাধ্যমে দেখানাে হয়েছে। দুই শৃগালের দুরভিসন্ধিতে সঞ্জীবকের প্রাণ নষ্ট হল। দমনক পশুরাজের মন্ত্রিপদ লাভ করল । এছাড়াও আরাে কিছু অপ্রাসঙ্গিক গল্প গ্রন্থটির মধ্যে লক্ষ্য করা যায় । বানর , কাঁকড়া , বক, শশক, সিংহ প্রভৃতিকে নিয়ে অনেক উপদেশমূলক গল্প গ্রন্থটির কলেবর বৃদ্ধি করতে সাহায্য করেছে।

দ্বিতীয় তন্ত্রটির নাম ‘মিত্রপ্রাপ্তি ‘ এতে আছে ৬ টি গল্প । গ্রন্থটির বিষয়বস্তু হল — অপরিচিত প্রাণীদের মধ্যে কিভাবে বন্ধুত্ব লাভ হয় তা দেখানাে ।

তৃতীয় তন্ত্রটি হল কাকোল্কীয় ’ বা সন্ধি – বিগ্রহ । এই তন্ত্রের বিষয়বস্তু হল — কাক ও পেচকের মধ্যে বৈরিতাবশতঃ আত্মরক্ষার জন্য কাকের পরামর্শ । এখানে নীতিশাস্ত্রের ষাড়গুণের কথা বর্ণনা করা হয়েছে । এতে মােট চারটি গল্প আছে ।

চতুর্থ তন্ত্রের নাম হল ‘ লন্ধপ্রণাশ ’ । এতে ৬ টি গল্প আছে । এখানে দেখানাে হয়েছে যে কিভাবে লন্ধবস্তু বােকামির জন্য প্রণষ্ট হয়ে যায় । যেমন একটি গল্পে দেখা যায় যে , এক বানরের সঙ্গে এক মকরের বন্ধুত্ব হয়ে ছিল এবং পরে মকরের নির্বুদ্ধিতার জন্য তাদের দুজনের বন্ধুত্ব নষ্ট হয়ে যায় । গল্পটির নাম হল বানরমকরকথা ।


পঞম তন্ত্রটির নাম অপরীক্ষিতকারক । এতে ১১৫ টি ছােট ছােট গল্প আছে । এই তন্ত্রের একটি উল্লেখযােগ্য গল্প হল চার মূখপণ্ডিতের কথা । তারা শাস্ত্রের বই পড়েছিল , কিন্তু তার মর্ম বুঝতে পারে নাই । শাস্ত্রের প্রয়ােগ বিদ্যা বা লােকাচার না জানায় তারা পদে পদে হাস্যাস্পদ হয়েছিল । এইভাবে গল্পগুলির মধ্যে দেখানাে হয়েছে যে সঠিকভাবে পরীক্ষা করে কাজ না করলে বিপদের সম্মুখীন হতে হয় । পতন্ত্রের গল্পগুলি মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অভিজ্ঞতাপ্রসূত , রাজনীতিসম্মত ও বৈচিত্র্যপূর্ণ । পশুপক্ষী- জন্তু – জানােয়ারকে দিয়ে লেখক কথা বলিয়েছেন । নীতিগর্ভ গল্পসাহিত্য হিসাবে পঞতন্ত্র বিশেষ খ্যাতিলাভ করেছে । গ্রন্থে চাণক্যের নাম আছে এবং কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রের প্রভাব আছে । পতন্ত্রের মূল রূপটি লুপ্ত হয়ে গেছে ।

এর অনেকগুলি রূপান্তরিত সংস্করণ পাওয়া যায় । যেমন— ( ১ ) পীরূপ ( পরবর্তীকালে হয়েছে আরবীয় রূপ ) , ( ২ ) উত্তর – পশ্চিম রূপ , ( ৩ ) কাশ্মীরীরূপ ( “ তন্ত্ৰাখ্যায়িকা ” নামে খ্যাত ) , ( ৪ ) দাক্ষিণাত্যরূপ প্রভৃতি । উক্ত রূপগুলির মধ্যে কবি ক্ষেমেন্দ্র ও সােমদেব অনেকগুলি গল্প তাদের গ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত করেছেন বলে মনে হয় । বহু ভাষায় এই পঞতন্ত্রের অনুবাদ করা হয়েছে । এই গ্রন্থের মূল রূপটি খ্রীষ্টীয় পঞ্চম শতকে রচিত হয়েছিল বলে পণ্ডিতেরা অনুমান করে থাকেন , আর মূল রূপটি রচিত হয়েছিল দাক্ষিণাত্যে । কারণ কথামুখ অংশে দাক্ষিণাত্যের কথাই পাওয়া যায় । তবে কেউ কেউ বলেন কাশ্মীরে , আবার কেউ কেউ বলেন গৌড়ে । সুতরাং এ নিয়ে বিতর্কের যথেষ্ট অবকাশ আছে ।


বিষ্ণু শর্মার অবদানঃ


গল্প শােনার অদম্য আকর্ষণ মানুষের চিরন্তন । একই কাহিনী নানা সময়ে নানা ভাবে বলা হয়েছে , তবু তার আস্বাদন মানুষের কাছে ফুরিয়ে যায় নি । সংস্কৃত গল্পসাহিত্যও এর ব্যতিক্রম নয় । সংস্কৃত গল্প সাহিত্যে পতন্ত্রের নাম বিশেষভাবে সর্বাগ্রে উল্লেখযােগ্য । এই পতন্ত্রের মতাে বহুল প্রচারিত গ্রন্থের সঙ্গে প্রচারের ক্ষেত্রে পাল্লা দিতে পারে একমাত্র বাইবেল । প্রায় পাঁচটি ভাষায় দুশাের বেশী সংস্করণে প্রকাশিত হয়েছে বিশ্বশর্মার ‘ পঞ্চতন্ত্র ।

পঞ্চতন্ত্র গল্পকার পণ্ডিত বিষ্ণুশর্মার রচনাশৈলীর এক বিশেষ বৈশিষ্ট্য — গল্পে উল্লেখিত প্রতিটি প্রসঙ্গই স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং একটি ধারাবাহিক মূল গল্পের অনুসৃত । প্রত্যেক প্রসঙ্গেই অনেক ছােট ছােট গল্প একটি বড়াে গল্পের মধ্যে অর্ন্তনিবিষ্ট হয়েছে । গল্পের মধ্যে গল্প সন্নিবেশ আবার মূল গল্পের সুরটিকে অব্যাহত রাখা গল্পকারের অনবদ্য রচনাশৈলীর পরিচায়ক । গল্পগুলি গদ্যে রচিত । এরমধ্যে অনেক নীতিগর্ভ শ্লোক আছে । গল্পের উপসংহারে এর প্রতিপাদ্য উপদেশ বা নীতিকথা শ্লোকের আকারে লিপিবদ্ধ হয়েছে ।

গল্প সাহিত্যের অন্তর্গত চরিত্রগুলি পশুপাখি । পতন্ত্রের ভাষা অত্যন্ত সরল এবং মার্জিত । এতে দীর্ঘ বর্ণনা , ভাব প্রবণতা বা অ্যথা পাণ্ডিত্য দেখানাের কোনাে চেষ্টা নেই । গল্পগুলি অত্যন্ত চিত্তাকর্ষক এবং অল্প বয়সের ছেলেমেয়েদের নীতি শিক্ষার পক্ষে বিশেষ উপযােগী । গ্রন্থকারের উদ্ভাবন শক্তি খুবই প্রশংসনীয় । গল্প বলার ক্ষেত্রে তার সংযমও লক্ষণীয় । কোনাে গল্পই অতিকথন দোষে দুষ্ট নয় । গল্পের মাধ্যমে মনােরঞ্জন এবং নীতিশিক্ষাদান এই দুই উদ্দেশ্যেই পঞ্চতন্ত্র গ্রন্থের সার্থক সৃষ্টি ।

আরও পডুনঃ রামায়ণ মহাকাব্য