টীকা- আঞ্চলিকতাবাদের উৎস | Sources of Regionalism

টীকা- আঞ্চলিকতাবাদের উৎস | Sources of Regionalism

আঞ্চলিকতাবাদের উৎস | Sources of Regionalism

■ উত্তর:- ভারতে আঞ্চলিকতাবাদের ইতিহাস খুবই পুরোনো। ব্রিটিশ আমলেও আঞ্চলিকতাবাদের অস্তিত্ব দেখতে পাওয়া যায়। ভারতে আঞ্চললিকতাবাদের উৎসগুলি হল-

● (ক) ভৌগোলিক আঞ্চলিকতাবাদ:- ভারতে প্রচুর ভৌগোলিক বিভিন্নতা বর্তমা। এক একটি ভৌগোলিক অঞ্চলে এক একটি উপজাতির মানুষ বাস করে এবং তারা অন্য জনজাতির থেকে নিজেদের পৃথক ভাবে এবং আঞ্চলিক স্বাতন্ত্রতা বজায় রাখতে চায়।

● (খ) অর্থনৈতিক আঞ্চলিকতাবাদ:- ভারতের সব অঞ্চলে সমান অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটে নি। এর ফলে ভারতের এক বিস্তীর্ণ অঞ্চলের মানুষ নিজেদের শোষিত বা বঞ্চিত মনে করেছে। তারা ভেবেছে কেন্দ্রিয় সরকার বা জাতীয় রাজনৈতিক দলের মাধ্যমে তাদের উন্নয়ন হবে না। ক্রমশই তারা জাতীয় রাজনৈতিক দলের পরিবর্তে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের দিকে ঝুঁকছে, জন্ম হয়েছে আঞ্চলিকতাবাদের।

● (গ) রাজনৈতিক আঞ্চলিকতাবাদ:- কংগ্রেস দল থেকে বহু নেতা বেরিয়ে গিয়ে তাদের রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্খা চরিতার্থ করতে গিয়ে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন। এইভাবেও আঞ্চলিকতাবাদের সৃষ্টি হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে এসে তৃণমূল কংগ্রেস গঠন করেন। বর্তমানে এই দল পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত এবং জাতীয় দলের মর্যাদা লাভ করেছে

● (ঘ) ভাষাগত আঞ্চলিকতাবাদ:- ভাষা একটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়। ভারতের উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলির মধ্যে ভাষার প্রশ্নে প্রবল টানাপোড়েন বর্তমান। দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলি হিন্দি ভাষার ক্রমবর্ধমান প্রভাব বিস্তারে শঙ্কিত তাই এখানে হিন্দির অনুপ্রবেশ রোধ করতে ও নিজস্ব ভাষাকে রক্ষা করতে ভাষাগত আঞ্চলিকতাবাদের সৃষ্টি হয়েছে।

● (ঙ) মনস্তাত্ত্বিক আঞ্চলিকতাবাদ:- আঞ্চলিকতাবাদ প্রধানত একটি মনস্তাত্ত্বিক বিষয়। মানুষের মনের গভীরে এর বীজ নিহিত থাকে। পাঞ্জাবের খালিস্তানি আন্দোলন, অসমের আন্দোলন, ঝাড়খণ্ড আন্দোলন প্রভৃতি সব আন্দোলনেই বস্তুগত উপাদান ছাড়াও মনস্তাত্ত্বিক উপাদান একটি বড় ভূমিকা পালন করেছিল, এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। সাম্প্রতিক কাশ্মীর আন্দোলনেও মনস্তাত্ত্বিক উপাদানের ভূমিকা সবচাইতে বেশি।