চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের কৃতিত্ব | চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের বংশ পরিচয় ও রাজত্বকাল | Chandragupta Maurya Accomplishments and Reign

 

চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের কৃতিত্ব | চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের বংশ পরিচয় ও রাজত্বকাল | Chandragupta Maurya Accomplishments and Reign
চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের কৃতিত্ব | চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের বংশ পরিচয় ও রাজত্বকাল | Chandragupta Maurya Accomplishments and Reign 


সুপ্রিয় বন্ধুরা,

Wellcome to www.ajjkal.com চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতির সেরা ঠিকানা, আজ নিয়ে এসেছি চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের কৃতিত্ব | চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের বংশ পরিচয় ও রাজত্বকাল | Chandragupta Maurya Accomplishments and Reign . প্রতিবছর বিভিন্ন পরীক্ষার যেমন WBP | WBTET | WBCS | SSC | TET | WBPSC | Food SI | BANK EXAM | All Jobs Exam | রাজ্য বা দেশের বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষা | স্কুল ও কলেজের বিভিন্ন পরীক্ষার প্রস্তুতি পত্র আপনাদের বিনামূল্যে দিয়ে এসেছি। তাই www.ajjkal.com আজ আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছে চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের কৃতিত্ব | চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের বংশ পরিচয় ও রাজত্বকাল | Chandragupta Maurya Accomplishments and Reign




চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের কৃতিত্ব | চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের বংশ পরিচয় ও রাজত্বকাল | Chandragupta Maurya Accomplishments and Reign   

চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের কৃতিত্ব:- রাজা চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য, যিনি গ্রিকদের কাছে সান্দ্রোকোত্তোস বা আন্দ্রাকোত্তাস নামে পরিচিত ছিলেন। তিনিই ছিলেন প্রথম সম্রাট যিনি বৃহত্তর ভারতের অধিকাংশকে এক শাসনাধীনে আনতে সক্ষম হয়েছিলেন। তিনি ৩২৪ খ্রিস্টপূর্বাব্দ হতে ৩০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত রাজত্ব করেছিলেন। পরবর্তীকাল তার পুত্র বিন্দুসার সিংহাসনে আরোহণ করেছিলেন।


চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি –

চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের রাজত্বকাল – ৩২৪ খ্রীষ্টপূর্ব - ৩০০ খ্রীষ্টপূর্ব

চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের রাজ্যাভিষেক – ৩২৪ খ্রীষ্টপূর্ব

চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের পূর্বসূরি – নন্দ সাম্রাজ্যের ধননন্দ

চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের উত্তরসূরি – বিন্দুসার (সন্তান)

চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের জন্ম – ৩৪০ খ্রিস্টপূর্ব
পাটলিপুত্র

চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের মৃত্যু – ২৯৫ খ্রিস্টপূর্ব

চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের ধর্ম – জৈন ধর্ম  (জন্মসূত্রে সনাতন ধর্ম)।


চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের বংশ পরিচয় (Ancestry of Chandragupta Maurya):-

চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের পূর্বপুরুষ ও কৈশোর সম্বন্ধে খুব বেশি তথ্য ইতিহাসের পাতায় পাওয়া যায় না। বিভিন্ন ধরনের ধ্রুপদী সংস্কৃত, গ্রিক ও লাতিন  সাহিত্য ও বিভিন্ন ঐতিহাসিকের রচনাবলী থেকে কিছু তথ্যাবলী সংগ্রহ করেছেন ঐতিহাসিকগণ।


চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের জীবনকালের প্রায় ৭০০ বছর পরে রচিত সংস্কৃত নাটক বিশাখাদত্তের মুদ্রারাক্ষসে তাকে নন্দন্বয় বা নন্দের বংশধর হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। নন্দরাজ্যের রাণীর এক অসহায় দাসী ছিল, যার নাম মুরা। একদা নন্দরাজ দাসী মুরার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে তার সাথে সম্পর্ক স্থাপন করেন। এবং তাদেই পুত্র সন্তান রূপে জন্ম নেন চন্দ্রগুপ্ত। বৌদ্ধ গ্রন্থ মহাবংশে চন্দ্রগুপ্তকে মোরিয় নামক একটি ক্ষত্রিয় গোষ্ঠীর সন্তান বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।


মৌর্য সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা (Establishment of the Mauryan Empire):-

পরবর্তীকালে নন্দরাজ মুরা ও তার সন্তানকে অস্বীকার করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে চন্দ্রগুপ্ত চাণক্যের সহায়তায় নন্দবংশ ধ্বংস করে মৌর্য সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন।

চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য চাণক্য নামক তক্ষশিলার এক কূটনৈতিক ব্রাহ্মণের নিকট শিক্ষালাভ করার পর তারা দুইজনে মিলে নন্দ সম্রাট ধননন্দকে  সিংহাসনচ্যুত করার পরিকল্পনা করেন।

চন্দ্রগুপ্তকথা নামক গ্রন্থে উল্লিখিত আছে, চন্দ্রগুপ্ত ও চাণক্যের সেনাবাহিনী প্রথমদিকে নন্দ সাম্রাজ্যে কর্তৃক পরাজিত হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে চন্দ্রগুপ্ত বেশ কয়েকটি যুদ্ধে ধননন্দ ও তার সেনাপতি ভদ্রশালাকে পরাজিত করতে সক্ষম হয়েছিলেন এবং অবশেষে পাটলিপুত্র নগরী অবরোধ করে ৩২১ খ্রিটপূর্বাব্দে মাত্র কুড়ি বছর বয়সে নন্দ সাম্রাজ্য অধিকার করে নেন।


চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের সাম্রাজ্য বিস্তার (Expansion of Chandragupta Maurya's empire):-

চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য নিজ ক্ষমতায় আসার পূর্বে ভারতীয় উপমহাদেশ বেশ কয়েকটি মহাজনপদে বিভক্ত ছিল এবং সিন্ধু-গাঙ্গেয় সমতলভূমি নন্দ রাজবংশের দ্বারা শাসনাধীনে ছিল। চন্দ্রগুপ্ত তার রাজত্বকালের শেষ পর্যন্ত তামিল ও কলিঙ্গ অঞ্চল ছাড়া ভারতীয় উপমহাদেশের অধিকাংশ স্থান অধিকার করতে করতে সক্ষম হয়েছিলেন।

চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের সাম্রাজ্য পূর্বে বাংলা থেকে পশ্চিমে আফগানিস্তান  ও বেলুচিস্তান, উত্তরে কাশ্মীর থেকে দক্ষিণে দাক্ষিণাত্য মালভূমি পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছিল। ভারতের ইতিহাসে এর আগে এত বৃহৎ সাম্রাজ্য নির্মিত হয়নি।


চন্দ্রগুপ্ত ও তার প্রধান পরামর্শদাতা কূটনৈতিক চাণক্য বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্কার সাধন করেছিলেন।চাণক্য রচিত অর্থশাস্ত্রের ওপর নির্ভর করে রাজা চন্দ্রগুপ্ত একটী শক্তিশালী কেন্দ্রীয় প্রশাসন গড়ে তুলেছিলেন। অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক বাণিজ্য ও কৃষির উন্নতির সাথে সাথে তার সাম্রাজ্যের একটি শক্রিশালী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে উঠেছিল।


চন্দ্রগুপ্ত দ্বারা ম্যাসিডনীয় সত্রপ রাজ্যগুলি অধিকার (Macedonian Satrap Kingdoms by Chandragupta):-

প্রায় ৩২৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মহান আলেকজান্ডারের  মৃত্যুর পরে চন্দ্রগুপ্ত তার সাম্রাজ্যের উত্তর পশ্চিম সীমান্তে অবস্থিত ম্যাসিডনীয় সত্রপ রাজ্যগুলি দখল করেন। রোমান ঐতিহাসিক মার্কাস জুনিয়ানিয়াস জাস্টিনাস তার বর্ণনায় চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের ম্যাসিডনীয় সত্রপগুলি অধিকার করার ঘটনাটি সুস্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করেছেন।


চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের দাক্ষিণাত্য অভিযান:-

পরবর্তীকালে চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য দক্ষিণ ভারতের দিকে অগ্রসর হন। তিনি বিন্ধ্য পর্বত পেরিয়ে দাক্ষিণাত্য মালভূমির সিংহভাগ দখল করতে সক্ষম হয়েছিলেন। এর ফলে কলিঙ্গ ও দাক্ষিণাত্যের অল্পকিছু অংশ বাদে প্রায় সমগ্র ভারত মৌর্য সাম্রাজ্যের অন্তর্গত হয়ে যায়। সঙ্গম সাহিত্যের বিখ্যাত তামিল কবি মমুলনার মৌর্য সেনাবাহিনী দ্বারা দাক্ষিণাত্য আক্রমণের ঘটনার সুস্পষ্ট বর্ণনা দিয়েছেন।


মৌর্য সম্রাট চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের মৃত্যু:-

চন্দ্রগুপ্ত জৈন আচার্য ভদ্রবাহুর নিকট আধ্যাত্মিক শিক্ষা লাভ করেন ও পরবর্তীকালে বিয়াল্লিশ বছর বয়সে সিংহাসন ত্যাগ করে জৈন ধর্ম গ্রহণ করে তার সাথে দাক্ষিণাত্যের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। জৈন প্রবাদানুসারে, চন্দ্রগুপ্ত শ্রবণবেলগোলায় জৈন আচার সল্লেখনা বা স্বেচ্ছা-উপবাস করে দেহত্যাগ করেছিলেন।

যাইহোক চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের কৃতিত্বের কথা ইতিহাসের পাতায় পাতায় যুগ যুগ ধরে স্বর্ণাক্ষরে মদ্রিত আছে এবং থাকবে।


Previous Post Next Post