সুপ্রিয় বন্ধুরা,
Wellcome to www.ajjkal.com চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতির সেরা ঠিকানা, আজ নিয়ে এসেছি গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় জীবনী | Sandhya Mukherjee Biography in Bengali . প্রতিবছর বিভিন্ন পরীক্ষার যেমন WBP | WBTET | WBCS | SSC | TET | WBPSC | Food SI | BANK EXAM | All Jobs Exam | রাজ্য বা দেশের বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষা | স্কুল ও কলেজের বিভিন্ন পরীক্ষার প্রস্তুতি পত্র আপনাদের বিনামূল্যে দিয়ে এসেছি। তাই www.ajjkal.com আজ আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছে গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় জীবনী | Sandhya Mukherjee Biography in Bengali।
গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় জীবনী | Sandhya Mukherjee Biography in Bengali
❏ ভূমিকা:- গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় একজন ভারতীয় নেপথ্য গায়িকা এবং সংগীতশিল্পী, এক কথায় বলা যায় বাংলা সঙ্গীত বিশেষজ্ঞ। ২০১১ সালে তিনি পশ্চিমবঙ্গের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান বঙ্গবিভূষণ পান। এছাড়া তিনি ১৯৭০ সালে "জয় জয়ন্তী" এবং "নিশিপদ্ম" চলচ্চিত্রে তার গানের জন্য সেরা গায়িকার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেছিলেন।
গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় কলকাতার ঢাকুরিয়াতে ৪ অক্টোবর ১৯৩১ সালে রেলের কর্মকর্তা নরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় এবং হেমপ্রভা দেবীর ঔরসে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি ছয় সন্তানের মধ্যে সবচেয়ে ছোট ছিলেন।
❏ কর্মজীবন:-
গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় পণ্ডিত সন্তোষ কুমার বসু, অধ্যাপক এ টি ক্যানন এবং অধ্যাপক চিন্ময় লাহিড়ীর নিকট সঙ্গীতের প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। তবে তার গুরু ছিলেন উস্তাদ বড়ে গোলাম আলী খান, তার পুত্র উস্তাদ মুনাওয়ার আলী খান, যার অধীনে তিনি ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত আয়ত্ত করেন। মনোরমা শর্মার মতে, "নেপথ্য গানের উজ্জ্বল গৌরব অর্জনের পরেও একজন শাস্ত্রীয় গায়িকা হিসাবে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, তার জনপ্রিয়তা বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন।"
যদিও তিনি শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে প্রশিক্ষিত হয়েছিলেন, তবুও তার বেশিরভাগ অবদান ছিল বাংলা আধুনিক গানে। ১৯৫০ সালে তারানা চলচ্চিত্রে একটি গান গেয়ে তিনি মুম্বাইতে হিন্দি গান গাওয়া শুরু করেন। তিনি প্রায় ১৭টি হিন্দি চলচ্চিত্রে গায়িকা হিসেবে গান গেয়ে নিজের অবদান রাখেন। ১৯৫২ সালেব্যক্তিগত কারণে তিনি তার কলকাতা শহরের বাড়িতে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন। ১৯৬৬ সালে তিনি বাঙালী কবি শ্যামল গুপ্তকে বিবাহ করেন। শ্যামল গুপ্ত তার অনেক গানের জন্য কথা লিখে দিয়েছিলেন।
তার সবচেয়ে জনপ্রিয় জুটি ছিল হেমন্ত মুখার্জীর সাথে, যার সাথে প্রাথমিকভাবে বাঙালি চলচ্চিত্রগুলির জন্য নেপথ্য গায়িকা হিসাবে তিনি বেশ কয়েকটি গান গেয়ে খ্যাতি লাভ করেন। হেমন্ত ও সন্ধ্যা বাংলার মহানায়ক উত্তম কুমার এবং তার অসংখ্য নায়িকা জোড়াগুলির নেপথ্য কণ্ঠস্বর হিসাবে পরিচিত হয়ে উঠেছিলেন, বিশেষত অভিনেত্রী সুচিত্রা সেনের কণ্ঠে।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে, যুদ্ধের হাত থেকে বাঁচতে কলকাতা তথা পশ্চিমবঙ্গে আগত লক্ষ লক্ষ উদ্বাস্তুদের জন্য তিনি ভারতীয় বাঙালি শিল্পীদের সঙ্গে একত্রিত হয়ে গণ আন্দোলনে যোগ দেন এবং আন্দোলনে জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহ করেন।
তিনি বাংলাদেশী সংগীতশিল্পী সমর দাসের সাহায্যার্থে বিভিন্ন দেশাত্মবোধক গান রেকর্ড করেন। কারাগারে বন্দী নতুন বাংলাদেশের নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তির উদ্দেশ্যে তার গাওয়া 'বঙ্গবন্ধু তুমি ফিরে এলে' গানটি গেয়েছিলেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর, প্রথম একুশে ফেব্রুয়ারির উদ্যাপন উপলক্ষে ঢাকায় পল্টন ময়দানের একটি কনসার্টে তিনি অনুষ্ঠান করেন।
❏ পুরস্কার ও সম্মানপ্রাপ্তি:-
১৯৭১ সালে 'জয় জয়ন্তী' এবং 'নিশিপদ্ম' চলচ্চিত্রে গান গেয়ে শ্রেষ্ঠ গায়িকা হিসেবে তিনি জাতীয় পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়াও ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্তৃক তাঁকে ''বঙ্গবিভূষণ'' উপাধিতে সম্মানিত করা হয়। ২০২২ সালের তিনি পদ্মশ্রী পুরস্কারপ্রাপ্ত হন। যদিও তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন।
❏ প্রায়ণ:-
২০২২ সালে এই কিংবদন্তি বাঙালি গায়িকা সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে শারিরীক অসুস্থতার কারণে এসএসকেএমের উডবার্ন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। ভর্তির কিছু সময়ের মধ্যেই তড়িঘড়ি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়। জানা যায়, শৌচাগারে পড়ে গিয়ে তিনি চোট পান পেয়েছিলেন। তার সাথে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যাও দেখা দিয়েছিল। অবশেষে ১৬ই ফেব্রুয়ারী ২০২২ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। এই কিংবদন্তি বাঙালি গায়িকা বাঙালির জীবনে অমর শিল্পি হয়ে থাকবেন।
আরও পড়ুন:- 1000 জেনারেল নলেজ প্রশ্ন উত্তর PDF