ভগিনী নিবেদিতা জীবনী | Biography of Sister Nivedita in Bengali

ভগিনী নিবেদিতা জীবনী | Biography of Sister Nivedita in Bengali
ভগিনী নিবেদিতা জীবনী | Biography of Sister Nivedita in Bengali

সুপ্রিয় বন্ধুরা,

Wellcome to www.ajjkal.com চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতির সেরা ঠিকানা, আজ নিয়ে এসেছি ভগিনী নিবেদিতা জীবনী | Biography of Sister Nivedita in Bengali . প্রতিবছর বিভিন্ন পরীক্ষার যেমন WBP | WBTET | WBCS | SSC | TET | WBPSC | Food SI | BANK EXAM | All Jobs Exam | রাজ্য বা দেশের বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষা | স্কুল ও কলেজের বিভিন্ন পরীক্ষার প্রস্তুতি পত্র আপনাদের বিনামূল্যে দিয়ে এসেছি। তাই www.ajjkal.com আজ আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছে ভগিনী নিবেদিতা জীবনী | Biography of Sister Nivedita in Bengali।




ভগিনী নিবেদিতা জীবনী | Biography of Sister Nivedita in Bengali

❏ ভগিনী নিবেদিতার জীবনী:-

ভগিনী নিবেদিতা ১৮৬৭ সালের ২৮ অক্টোবর উত্তর আয়ারল্যান্ডের ডানগ্যানন শহরে মার্গারেট এলিজাবেথ নোবেল জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর বাবা স্যামুয়েল রিচমন্ড নোবেল ছিলেন ধর্মযাজক। মায়ের নাম ছিল মেরি ইসাবেলা। মাত্র দশ বছর বয়সে মার্গারেটের বাবা মারা যান। তারপর তাঁর দাদামশাই তথা আয়ারল্যান্ডের বিশিষ্ট স্বাধীনতা সংগ্রামী হ্যামিলটনের কাছে তিনি লালনপালন হয়েছিলেন। লন্ডনের একটি স্কুলে মার্গারেটের বিদ্যাশিক্ষা শুরু হয়। সতেরো বছর বয়সে শিক্ষাজীবনের ইতি টেনে মার্গারেট শিক্ষিকার পেশা গ্রহণ করেছিলেন। কিছুদিন পরে উইম্বলডনে নিজের একটি স্কুল চালু করেন। পাশাপাশি নানা পত্রপত্রিকায় প্রবন্ধ লিখতে ও চার্চের হয়ে নানা সেবামূলক কাজও শুরু করেছিলেন।

১৮৯৫ সালের নভেম্বর মাসে লন্ডনের একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানের আসরে মার্গারেট স্বামী বিবেকানন্দের বেদান্ত দর্শন ব্যাখ্যা শোনেন। বিবেকানন্দের ধর্মব্যাখ্যা ও ব্যক্তিত্বে তিনি খুবই মুগ্ধ হয়েছিলেন। তাঁর প্রতিটি বক্তৃতা ও প্রশ্নোত্তরের ক্লাসে মার্গারেট উপস্থিত থাকতেন। তারপর তিনি বিবেকানন্দকেই নিজের গুরু বলে হিসেবে বরণ করে নেন।

ভগিনী নিবেদিতা ছিলেন একজন বিখ্যাত অ্যাংলো-আইরিশ বংশোদ্ভুত সমাজকর্মী, লেখিকা, শিক্ষিকা এবং স্বামী বিবেকানন্দের শিষ্যা। ১৮৯৫ সালে লন্ডনে তিনি স্বামী বিবেকানন্দের সাক্ষাৎ পান এবং ১৮৯৮ সালে তিনি ভারতে চলে এসেছিলেন। একই বছরে ২৫ মার্চ তিনি ব্রহ্মচর্য গ্রহণ করলে স্বামী বিবেকানন্দ তাঁর নতুন নামকরণ করেন "নিবেদিতা"

ভগিনী নিবেদিতার জন্ম হয়েছিল উত্তর আয়ারল্যান্ডে। তিনি তাঁর পিতা স্যামুয়েল রিচমন্ড নোবেলের নিকট এই শিক্ষা লাভ করেন যে মানব সেবাই হলো ঈশ্বর সেবা। পিতার এই কথা তাঁর পরবর্তী জীবনেও গভীর প্রভাব বিস্তার করে। তিনি সঙ্গীত ও শিল্পকলায় পারদর্শী ছিলেন। পড়াশোনা শেষ করে ১৮৮৪ সাল থেকে ১৮৯৪ সাল পর্যন্ত দশ বছর তিনি শিক্ষকতা করেছিলেন। শিক্ষিকা হিসেবেও তিনি বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেন। শিক্ষকতা করতে করতেই তিনি বুদ্ধের শিক্ষা সম্পর্কে আগ্রহী হয়ে উঠেছিলেন। এই সময়ই স্বামী বিবেকানন্দের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়েছিল। বিবেকানন্দের বাণী তাঁর জীবনে এতটাই গভীর প্রভাব বিস্তার করেছিল যে তিনি ভারতকে তাঁর কর্মক্ষেত্ররূপে বেছে নিয়েছিলেন। তিনিই হলেন প্রথম পাশ্চাত্য নারী যিনি ভারতীয় সন্ন্যাসিনীর ব্রত গ্রহণ করেন।

১৮৯৮ সালের নভেম্বর মাসে তিনি কলকাতায় একটি বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করেছিলেন। এর সঙ্গে সঙ্গে তিনি নানান ধরনের মানবকল্যাণমূলক কাজের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিলেন। সকল বর্ণের ভারতীয় নারীর জীবনযাত্রার উন্নতির লক্ষ্যে তিনি বিভিন্ন সমাজকল্যাণ মূলক কাজ আরম্ভ করেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জগদীশচন্দ্র বসু ও তাঁর স্ত্রী অবলা বসু, অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ওকাকুরা কাকুজো প্রমুখ তৎকালীন সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ছিলেন নিবেদিতার বন্ধুস্থানীয়।

রবীন্দ্রনাথ তাঁকে "লোকমাতা" আখ্যা দিয়েছিলেন। ভারতীয় শিল্পকলায় পারদর্শী নিবেদিতা ভারতের আধুনিক চিত্রকলার সৃজনে অন্যতম অনুপ্রেরণার কাজ করেছিলেন। নন্দলাল বসু এই কথা একাধিকবার স্মরণ করেছিলেন।

জীবনের শেষ পর্বে নিবেদিতা স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিলেন। এই সময় শ্রীঅরবিন্দের সঙ্গে তাঁর সখ্যতা স্থাপিত হয়। এই সময় ব্রিটিশ সরকার যাতে রামকৃষ্ণ মিশনকে অযথা উত্ত্যক্ত করতে না পারে, সেই কথা ভেবে তিনি মিশনের সঙ্গে তাঁর "আনুষ্ঠানিক" সম্পর্ক ত্যাগ করেছিলেন।

১৮৯৮ সালের ২৮ জানুয়ারি স্বদেশ ও পরিবার-পরিজনকে ত্যাগ করে মার্গারেট ভারতে চলে আসেন। ভারতে এসে বিবেকানন্দের কাছে ভারতের ইতিহাস, দর্শন, সাহিত্য, জনজীবন, সমাজতত্ত্ব, প্রাচীন ও আধুনিক মহাপুরুষদের জীবনকথা শুনে মার্গারেট ভারত সম্বন্ধে সুস্পষ্ট ধারণা লাভ করেন। ভারতে আসার কিছুদিন পর রামকৃষ্ণ পরমহংসের স্ত্রী সারদা দেবীর সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়। এর কয়েক দিন পর স্বামী বিবেকানন্দ তাঁকে ব্রহ্মচর্য ব্রতে দীক্ষা দেন। তিনিই মার্গারেটের নতুন নাম রাখেন ‘নিবেদিতা’।

মেয়েদের লেখাপড়া শেখানোর উদ্দেশ্যে নিবেদিতা উত্তর কলকাতার বাগবাজার অঞ্চলের বোসপাড়া লেনে মেয়েদের জন্য একটি স্কুল চালু করেন। ১৮৯৯ সালে কলকাতার সমস্ত এলাকায় প্লেগ মহামারী দেখা দিলে তিনি স্থানীয় যুবকদের সহায়তায় রোগীদের সেবাশুশ্রুষা ও পল্লী-পরিষ্কারের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেন।

১৯০২ সালের ৪ঠা জুলাই নিবেদিতার গুরু স্বামী বিবেকানন্দ পরোলোক গমন করেন। তারপর নিবেদিতা ব্রিটিশ-বিরোধী জাতীয়তাবাদী আন্দোলন গুলিতে যোগ দেন। কিন্তু রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের নিয়মানুসারে ধর্ম ও রাজনীতির সংস্রব ঠেকাতে সংঘের কেউ রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করতে পারত না। তাই মিশনের সঙ্গে তিনি তার সম্পর্ক পরিত্যাগ করেন। তারপরও সারদা দেবী ও রামকৃষ্ণ মিশনের সন্ন্যাসীদের সঙ্গে তাঁর আমৃত্যু সুসম্পর্ক বজায় ছিল।

১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলনের সময় সকলের নজর এড়িয়ে বিপ্লবীদের সাহায্য করতে শুরু করেন নিবেদিতা। এই সময় অরবিন্দ ঘোষ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জগদীশচন্দ্র বসু প্রমুখ বিশিষ্ট ভারতীয় ব্যক্তিত্বের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়।

কিন্তু ভারতের গ্রীষ্মপ্রধান আবহাওয়ায় অতিরিক্ত পরিশ্রম করার ফলে নিবেদিতা কয়েক বছরের মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। অবশেষে ১৯১১ সালে হাওয়া বদলের জন্য জগদীশচন্দ্র বসু ও তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে দার্জিলিঙে বেড়াতে যান। এই বছরেই ১৩ অক্টোবর মাত্র ৪৪ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন নিবেদিতা।

আরও পড়ুন:- 1000 জেনারেল নলেজ প্রশ্ন উত্তর PDF

Previous Post Next Post