সুপ্রিয় বন্ধুরা,
Wellcome to www.ajjkal.com চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতির সেরা ঠিকানা, আজ নিয়ে এসেছি হরপ্পা সভ্যতার ধর্মীয় ও অর্থনৈতিক জীবন | Religious and Economic Life of the Harappan Civilization . প্রতিবছর বিভিন্ন পরীক্ষার যেমন WBP | WBTET | WBCS | SSC | TET | WBPSC | Food SI | BANK EXAM | All Jobs Exam | রাজ্য বা দেশের বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষা | স্কুল ও কলেজের বিভিন্ন পরীক্ষার প্রস্তুতি পত্র আপনাদের বিনামূল্যে দিয়ে এসেছি। তাই www.ajjkal.com আজ আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছে হরপ্পা সভ্যতার ধর্মীয় ও অর্থনৈতিক জীবন | Religious and Economic Life of the Harappan Civilization।
হরপ্পা সভ্যতার ধর্মীয় ও অর্থনৈতিক জীবন | Religious and Economic Life of the Harappan Civilization
■ হরপ্পা সভ্যতার ধর্মীয় জীবন : সিন্ধু সভ্যতার অধিবাসীদের ধর্ম কী ছিল তা সঠিকভাবে বলা সম্ভব নয়। যেসব মূর্তি পাওয়া গেছে তাতে দেবী ও পুরুষ মূর্তির নিদর্শন রয়েছে। হরপ্পার প্রাপ্ত নারীমূর্তিকে পৃথিবীর অধিষ্টাত্রী দেবী বলে মনে হয়। একটি সিলমোহরে ত্রিমুখবিশিষ্ট এবং জীবজন্তু পরিবেষ্টিত যোগীমূর্তি পাওয়া গেছে। এই মূর্তি যোগীর আসনে উপবিষ্ট, তাঁর মাথায় আছে শিং। এই যোগী দেবতাকে স্যার জন মার্শাল ‘পশুপতি শিব’ এবং ব্যাসাম ‘আদি শিব’ বলে অভিহিত করেছেন।
এই সিলমোহর থেকে মনে হয় যে, এই সভ্যতার প্রধান উপাস্য দেবতা ছিলেন পশুপতি মহাদেব। হরপ্পাবাসীরা দেবদেবীর পাশাপাশি গাছপালা, জীবজন্তু, সাপ, জল, নদনদী ও পশুপাখির উপাসনা করতেন। হরপ্পায় পাওয়া বহু মূর্তির গায়ে ধোঁয়ার চিহ্ন থেকে মনে হয় যে, এখানকার অধিবাসীরা পূজার সময় ধূপ ও দ্বীপ জ্বালতেন। এছাড়া স্বস্তিকা চিহ্নের ব্যবহার তাঁদের সূর্য পূজার ইঙ্গিত দেয়। যদিও ধর্মীয় উপাসনার জন্য কোনও মন্দির বা উপাসনালয় আবিষ্কৃত হয়নি। তবে এই সভ্যতার ধর্মীয় ব্যবস্থায় পরবর্তীকালের হিন্দুধর্মের হিন্দু দেবদেবীর পূর্বাভাষ পাওয়া যায়। হিন্দুধর্মের শক্তির প্রতীক হিসেবে যে মাতৃদেবীর পূজা প্রচলিত হয় তার আভাস মেলে হরপ্পা সভ্যতায়।
● মৃতদেহ সৎকার ও পারলৌকিক বিশ্বাস : হরপ্পায় একটি বড়ো আকারের কবর আবিষ্কৃত হয়েছে। তাতে মনে হয় সেই সময় মৃতদেহ সমাধিস্থ করা হত ও সেই সঙ্গে মৃতের ব্যবহার করা জিনিসপত্র ও অলংকার কবরে রাখা হত। অর্থাৎ হরপ্পা সভ্যতার অধিবাসীরা পরলোকে বিশ্বাস করতেন।
■ হরপ্পা সভ্যতার অর্থনৈতিক জীবন : হরপ্পা সভ্যতার অর্থনৈতিক জীবন আলোচনার ক্ষেত্রে দুটি প্রধান বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা যায়, যেমন :
প্রথমত, নগরকেন্দ্রিক হলেও হরপ্পা সভ্যতার মূল ভিত্তি ছিল কৃষি। শহরগুলির বাইরে বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে কৃষিকার্যের প্রচলন ছিল। কৃষির জন্য সেচের ব্যবস্থা ছিল কিনা তা সার্বিক জানা যায় না। কৃষিতে উৎপন্ন প্রধান খাদ্যশস্য ছিল গম, যব ও নানাজাতীয় বাদাম। তবে এযুগে ধানের চাষ প্রচলিত ছিল কিনা তা সঠিক জানা যায় না। বস্তুত কৃষির উপর ভিত্তি করে এযুগে নগর সভ্যতার সৌধ রচিত হয়েছিল।
দ্বিতীয়ত, হরপ্পা সভ্যতা ছিল ব্রোঞ্জ যুগের সমসাময়িক। টিনের সঙ্গে তামার মিশ্রণ ঘটিয়ে ব্রোঞ্জ প্রস্তুত করা হত এবং ব্রোঞ্জ দিয়ে অস্ত্রশস্ত্র ও প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী তৈরি হত। তবে সে যুগে লোহার ব্যবহার প্রচলিত ছিল না। শহরগুলিতে অনেক শিল্প গড়ে উঠেছিল। শিল্পের মধ্যে বস্ত্র শিল্পের স্থান ছিল সবার ওপরে। তুলায় প্রস্তুত বস্ত্র ছাড়া এযুগে পশমের পোশাকেরও ব্যবহার প্রচলিত ছিল। মৃৎশিল্প ও রঞ্জন শিল্পেও সিন্ধুবাসীরা উন্নত ছিল। মৃৎশিল্পীরা মাটির পাত্র তৈরি করে আগুনে পুড়িয়ে তা রং দিয়ে চিত্রিত করত।
তৃতীয়ত, হরপ্পা সভ্যতায় ব্যাবসাবাণিজ্যেরও প্রসার ঘটেছিল। রাজস্থান, কাশ্মীর, দক্ষিণভারত, আফগানিস্তান ও ইরানের সঙ্গে সিন্ধু অঞ্চলের ঘনিষ্ট বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। এমনকি টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস নদী তীরের নগরগুলির সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কের পরিচয় পাওয়া যায়। সিন্ধু অঞ্চলে অনেক সিলমোহর পাওয়া গেছ। এগুলি সাধারণত ব্যাবসা বাণিজ্যের কাজে ব্যবহার করা হত। গুজরাটের লোথালে একটি জাহাজের বন্দর আবিষ্কৃত হয়েছে। বিদেশ থেকে হরপ্পা সভ্যতায় সোনা, টিন, সিসা, রূপা, তামা, শঙ্খ, দেবদারু কাঠ, নীলকান্তমণি প্রভৃতি আমদানি করা হত। অপর দিকে রপ্তানি দ্রব্যগুলির মধ্যে হাতির দাঁত, মণিমুক্তা, সুতিবস্ত্র, চিরুনি, ময়ূর ও ময়ূরপুচ্ছ প্রভৃতি ছিল প্রধান।
আরও পড়ুন:- 1000 জেনারেল নলেজ প্রশ্ন উত্তর PDF