সুপ্রিয় বন্ধুরা,
Wellcome to www.ajjkal.com চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতির সেরা ঠিকানা, আজ নিয়ে এসেছি মৌর্য সম্রাট চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের পরিচয় | Introduction to Emperor Chandragupta Maurya . প্রতিবছর বিভিন্ন পরীক্ষার যেমন WBP | WBTET | WBCS | SSC | TET | WBPSC | Food SI | BANK EXAM | All Jobs Exam | রাজ্য বা দেশের বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষা | স্কুল ও কলেজের বিভিন্ন পরীক্ষার প্রস্তুতি পত্র আপনাদের বিনামূল্যে দিয়ে এসেছি। তাই www.ajjkal.com আজ আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছে মৌর্য সম্রাট চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের পরিচয় | Introduction to Emperor Chandragupta Maurya।
মৌর্য সম্রাট চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের পরিচয় | Introduction to Emperor Chandragupta Maurya
❏ মৌর্য সম্রাট চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের পরিচয় (Introduction to Emperor Chandragupta Maurya):-
মৌর্য বংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য (৩২৪-৩০০ খ্রিস্ট পূর্ব)। তাঁর নেতৃত্বে ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক গৌরবময় ও যুগান্তকারী অধ্যায়ের সূচনার সঙ্গে সঙ্গে সর্বভারতীয় সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার আদর্শ বাস্তব রূপ গ্রহণ করে। বস্তুত ভারত-ইতিহাসের এক জটিল ও হতাশাব্যঞ্জক মুহূর্তে চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য ইতিহাসের আঙ্গিনায় আবির্ভূত হন। তাঁর আগমনের প্রাক্কালে উত্তর-পশ্চিম ভারত ছিল বিদেশি গ্রীক শক্তির কবলে এবং অন্যদিকে পূর্ব ভারত ছিল জনবিরোধী নন্দ কুশাসনে জর্জরিত।
■ [১] আদি পরিচয় : চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের আদি পরিচয় সম্পর্কে বিভিন্ন ধারণা প্রচলিত আছে। পুরাণ ও মুদ্রারাক্ষস নাটকে তাঁকে শূদ্রবংশের সন্তান বলে অভিহিত করা হয়েছে। পক্ষান্তরে বৌদ্ধ ও জৈন সূত্র অনুসারে চন্দ্রগুপ্ত ‘মোরিয়’ ক্ষত্রিয় বংশজাত । আধুনিক ঐতিহাসিকগণ অনেক বিচার বিবেচনা করে চন্দ্রগুপ্তকে ক্ষত্রিয় বংশজাত বলেই সিদ্ধান্তে এসেছেন। চন্দ্রগুপ্ত প্রথমে নন্দবংশের সম্রাট ধননন্দকে ক্ষমতাচ্যুত করেন। কিংবদন্তী থেকে জানা যায় যে, চন্দ্রগুপ্তের পিতা ধননন্দের হাতে নিহত হয়েছিলেন। সেই হত্যার প্রতিশোধ নেবার জন্য চন্দ্রগুপ্ত চাণক্য নামে এক ব্রায়ণের সাহায্য নেন। সম্মুখ যুদ্ধে নন্দসেনাপতি - ভদ্রশাল পরাজিত হন।
■ [২] গ্রীক আক্রমণ প্রতিহতকরণ : মগধের সিংহাসন দখল করার পর চন্দ্রগুপ্ত গ্রীক আক্রমণের সম্মুখীন হন। গ্রীক সম্রাট আলেকজান্ডারের মৃত্যুর পর তাঁর সুবিশাল সাম্রাজ্য বিভিন্ন অংশে বিভক্ত হয়ে পড়ে। সিরিয়া ও ভারতের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত অঞ্চল সেলুকাস নামে এক গ্রীক সেনাপতির কর্তৃত্বে আসে। পাঞ্জাব ও সিন্ধুদেশ চন্দ্রগুপ্তের হাত থেকে পুনরুদ্ধারের জন্য সেলুকাস এক বিশাল সৈন্যবাহিনী নিয়ে অভিযান শুরু করেন (৩০৫ খ্রিঃপূর্ব)। চন্দ্রগুপ্ত তাঁকে বাধা দেন এবং শেষ পর্যন্ত সেলুকাস পরাজিত হন। অবশেষে সেলুকাস চন্দ্রগুপ্তের সঙ্গে সন্ধি করেন, এই সন্ধির শর্ত অনুসারে সেলুকাস চন্দ্রগুপ্তকে হিরাট, কাবুল, কান্দাহার ও মাকরাণ এই চারটি প্রদেশ ছেড়ে দেন এবং সম্প্রীতির নিদর্শন হিসেবে চন্দ্রগুপ্তের রাজসভায় মেগাস্থিনিস নামে এক গ্রীক দূতকে পাঠান। মেগাস্থিনিসের ভারত সম্পর্কে লিখিত বিবরণ ‘ইন্ডিকা’ নামে পরিচিত।
■ [৩] চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের রাজনৈতিক ও সামরিক কর্মকান্ডের উদ্দেশ্য : চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের রাজনৈতিক ও সামরিক কর্মকাণ্ড তিনটি উদ্দেশ্য দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল, যেমন :
প্রথমত, তিনি নন্দবংশের উচ্ছেদ করেছিলেন।
দ্বিতীয়ত, উত্তর-পশ্চিম ভারতে বিদেশি গ্রীক শাসনের অবসান ঘটিয়েছিলেন।
তৃতীয়ত, এরপর তিনি সর্বভারতীয় সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার দিকে নজর দেন।
■ [৪] সাম্রাজ্য বিস্তার : চন্দ্রগুপ্ত মগধের সাম্রাজ্যসীমা ভারতের প্রায় সর্বত্র প্রসারিত করেন। গিরণর শিলালিপি থেকে জানা যায় যে, গুজরাট, অবন্তী, মালব, মহারাষ্ট্র ও কোঙ্কন অঞ্চল তাঁর সাম্রাজ্যভুক্ত হয়। দক্ষিণে গোদাবরী নদী অতিক্রম করে তিনি মহীশূর ও মাদ্রাজের তিনেভেলী পর্যন্ত অগ্রসর হন। ঐতিহাসিক ডঃ রাধাকুমুদ মুখ্যোপাধ্যায় চন্দ্রগুপ্তকে “প্রথম ঐতিহাসিক সর্বভারতীয় সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠাতা” বলে অভিহিত করেছেন।
■ [৫] শাসক হিসেবে মূল্যায়ন : চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য শুধুমাত্র দিগ্বিজয়ী বীর ছিলেন না, দক্ষ শাসক হিসাবেও যথেষ্ট কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছিলেন। একদিকে তিনি যেমন রাজচক্রবর্তীর আদর্শকে বাস্তবায়িত করেছিলেন, অন্যদিকে একটি সুনিয়ন্ত্রিত শাসন ব্যবস্থার মাধ্যমে বিশাল সাম্রাজ্যকে সুদৃঢ় করেছিলেন। কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র থেকে জানা যায় যে, চন্দ্রগুপ্ত কীভাবে এক সুনিয়ন্ত্রিত শাসনব্যবস্থা গড়ে তুলেছিলেন। মৌর্য শাসনব্যবস্থার কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন সম্রাট। স্বৈরতান্ত্রিক ক্ষমতার অধিকারী হয়েও চন্দ্রগুপ্ত জনকল্যাণের লক্ষ্য থেকে সরে আসেন নি। মেগাস্থিনিসের বিবরণে চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের সময়ে রাজধানী পাটলিপুত্রের শাসন কাঠামো, রাজস্ব ব্যবস্থা, সামরিক বিভাগ প্রভৃতি সম্পর্কে নানান তথ্য জানা যায়।
আরও পড়ুন:- 1000 জেনারেল নলেজ প্রশ্ন উত্তর PDF