প্রাচীন ভারতের ইতিহাস রচনায় প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান গুলির বিবরণ | Archaeological Material Historiography of Ancient India

প্রাচীন ভারতের ইতিহাস রচনায় প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান গুলির বিবরণ | Archaeological Material Historiography of Ancient India
প্রাচীন ভারতের ইতিহাস রচনায় প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান গুলির বিবরণ | Archaeological Material Historiography of Ancient India

সুপ্রিয় বন্ধুরা,

Wellcome to www.ajjkal.com চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতির সেরা ঠিকানা, আজ নিয়ে এসেছি প্রাচীন ভারতের ইতিহাস রচনায় প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান গুলির বিবরণ | Archaeological Material Historiography of Ancient India . প্রতিবছর বিভিন্ন পরীক্ষার যেমন WBP | WBTET | WBCS | SSC | TET | WBPSC | Food SI | BANK EXAM | All Jobs Exam | রাজ্য বা দেশের বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষা | স্কুল ও কলেজের বিভিন্ন পরীক্ষার প্রস্তুতি পত্র আপনাদের বিনামূল্যে দিয়ে এসেছি। তাই www.ajjkal.com আজ আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছে প্রাচীন ভারতের ইতিহাস রচনায় প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান গুলির বিবরণ | Archaeological Material Historiography of Ancient India।




প্রাচীন ভারতের ইতিহাস রচনায় প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান গুলির বিবরণ | Archaeological Material Historiography of Ancient India

❏ প্রাচীন ভারতের ইতিহাস রচনায় প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান গুলির বিবরণ (Archaeological Material in the Historiography of Ancient India)

■ প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান : প্রাচীন ভারতের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাস রচনার জন্য প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদানের উপযোগিতা কম নয়। প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদানগুলিকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়, যেমন : (১) লিপি, (২) মুদ্রা, এবং (৩) স্থাপত্য ও ভাস্কর্য।

■ (১) লিপি : প্রাচীন ভারতের ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে প্রাচীন লিপি হল একটি মূল্যবান উপাদান। পাথর, তামা, লৌহ, ব্রোঞ্জ প্রভৃতি ধাতুর উপর লিপিগুলি উৎকীর্ণ করা হতো, এমনকি প্রাচীনকালে মাটি পুড়িয়েও লিপি তৈরি করার রীতি ছিল। লিপি থেকে তৎকালীন রাজনৈতিক, আর্থসামাজিক ও ধর্মীয় জীবনযাত্রার পরিচয় পাওয়া যায়। এই কারণেই লিপিকে ইতিহাসের জীবন্ত দলিল বলা যেতে পারে, কেননা কালভেদে সাহিত্যের ভাষা ও বক্তব্যের পরিবর্তন ঘটলেও লিপি সবসময়েই অপরিবর্তিত থাকে। প্রাচীন লিপিগুলোকে দেশীয় এবং বিদেশি এই দু'ভাগে ভাগ করা যেতে পারে।


● দেশীয় লিপি : দেশীয় লিপিগুলি ব্রাহ্মী, খরোষ্ঠী, তামিল, পালি, সংস্কৃত, প্রাকৃত প্রভৃতি বহু ভাষায় লেখা হত। অশোকের শিলালিপি এই লিপিগুলির প্রধান বিষয়বস্তু ছিল ভারতীয় রাজাদের রাজ্যজয়, রাজপ্রশস্তি, ভূমিদান, শাসন, ধর্ম, রাজনৈতিক ঘটনা , ব্যাবসাবাণিজ্য প্রভৃতি সংক্রান্ত। প্রাচীন ভারতের লিপিগুলির মধ্যে অশোকের লিপিই ছিল অন্যতম। এছাড়াও সমুদ্রগুপ্তের এলাহাবাদ প্রশস্তি, সাতবাহন রাজ গৌতমীপুত্র সাতকর্ণীর ‘নাসিক প্রশস্তি’, চালুক্যরাজ দ্বিতীয় পুলকেশীর ‘আইহোল লিপি’, রুদ্রদামনের জুনাগড় শিলালিপি, কলিঙ্গরাজের হাতিগুম্ফা লিপিও সবিশেষ স্মরণযোগ্য।


● বিদেশি লিপি : এশিয়া মাইনর , আনাতোলিয়া, তুর্কিস্থান, কম্বোডিয়া, চম্পা, যবদ্বীপ, ইন্দোচিন, ইন্দোনেশিয়া প্রভৃতি ভারতের বাইরের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাওয়া লিপিগুলোকে বিদেশি লিপি বলে। এই সব লিপিগুলো থেকে বিদেশের সঙ্গে ভারতের সাংস্কৃতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের হদিশ পাওয়া যায়।

■ মুদ্রা : প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদানগুলির মধ্যে মুদ্রার গুরুত্ব অপরিসীম। সাহিত্য ও লিপি থেকে যেসব তথ্য সংগ্রহ করা যায় তার সত্যতা যাচাই করার জন্য মুদ্রার বিশেষ উপযোগিতা রয়েছে। প্রাচীনকালের মুদ্রাগুলো সাধারণত সোনা, রূপা, তামা, ব্রোঞ্জ, সীসা এমনকি মাটি পুড়িয়ে তৈরি করা হত। ভারতে গ্রিক আক্রমণের পর থেকেই রাজার নাম খোদাই করা মুদ্রার প্রচলন হয়। মুদ্রা থেকে রাজার নাম, সাল, তারিখ, তৎকালীন রাজনৈতিক, আর্থিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাস, সাম্রাজ্যের ভৌগোলিক পরিধি, ধর্মবিশ্বা, সামাজিক অবস্থা, বৈদেশিক বাণিজ্য প্রভৃতি মূল্যবান তথ্য নির্ভুলভাবে জানা যায়। এমনকি মুদ্রা থেকে রাজতন্ত্র ও প্রজাতান্ত্রিক (শক ও পল্লব যুগ) রাজ্য সম্পর্কীত তথ্যও পাওয়া যায়। 


কোনও কোনও মুদ্রায় অঙ্কিত ছবি থেকে সেই রাজার ব্যক্তিগত গুণাবলির প্রতিফলন পাওয়া যায়। দৃষ্টান্ত হিসেবে সমুদ্রগুপ্তের বীণাবাদন মূর্তি থেকে তাঁর সংগীত-প্রীতির পরিচয় পাওয়া যায়। সমুদ্রগুপ্তের মুদ্রা প্রাচীন ভারতে ‘নিষ্ক’ বা ‘মনা’ নামে মুদ্রা ব্যবহৃত হলেও গ্রীক, শক, কুষাণ, পাল, প্রতিহার ও রাষ্ট্রকূট বংশের আমলেই মুদ্রার প্রচলন বেশি ঘটে।


■ (৩) স্থাপত্য ও ভাস্কর্য : মাটির নীচে খননকার্যের মাধ্যমে যে সমস্ত মূর্তি, মন্দির, বাড়িঘর, নগর, সমাধি, আসবাবপত্র পাওয়া যায় তা সাধারণভাবে স্থাপত্য-ভাস্কর্য নামে পরিচিত। রাজনৈতিক ইতিহাসের ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় হলেও শিল্প-সংস্কৃতি তথা সামাজিক ও ধর্মীয় ইতিহাসের ক্ষেত্রে স্থাপত্য ও ভাস্কর্যের অপরিসীম গুরুত্ব রয়েছে। এক্ষেত্রে হরপ্পা ও মহেঞ্জোদাড়োতে প্রাপ্ত স্থাপত্য ও ভাস্কর্যগুলো অন্যতম। এছাড়া গুজরাট, রাজস্থান, হরিয়ানা, সাঁচী, সারনাথ, পাটলিপুত্র, রাজগীর, নালন্দা এবং বাংলায় পাহাড়পুর ও সাম্প্রতিককালে চন্দ্রকেতুগড়ে মূল্যবান প্রত্নতাত্ত্বিক ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কৃত হয়েছে। উত্তর-পশ্চিম ভারতের (বর্তমানে পাকিস্তানে) মেহেড়গড়ে ভারতের প্রাচীনতম সভ্যতার নিদর্শন পাওয়া গেছে। 

সাহিত্যিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক দু'ধরনের উপাদানের মধ্যে কোনটি বেশি সারনাথের অশোক স্তম্ভ গুরুত্বপূর্ণ তা বলা অত্যন্ত কঠিন। কোনো যুগে সাহিত্যিক উপাদানের উপযোগিতা বেশি, আবার অন্য কোনো যুগে প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদানের উপরই একান্তভাবে নির্ভর করতে হয়। তবে প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদানের বিশ্বাসযোগ্যতা যে তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি, তা বলাই বাহুল্য।

আরও পড়ুন:- 1000 জেনারেল নলেজ প্রশ্ন উত্তর PDF

Previous Post Next Post