সুপ্রিয় বন্ধুরা,
Wellcome to www.ajjkal.com চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতির সেরা ঠিকানা, আজ নিয়ে এসেছি পলাশির যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল | Causes and Consequences of Battle of Plassey . প্রতিবছর বিভিন্ন পরীক্ষার যেমন WBP | WBTET | WBCS | SSC | TET | WBPSC | Food SI | BANK EXAM | All Jobs Exam | রাজ্য বা দেশের বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষা | স্কুল ও কলেজের বিভিন্ন পরীক্ষার প্রস্তুতি পত্র আপনাদের বিনামূল্যে দিয়ে এসেছি। তাই www.ajjkal.com আজ আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছে পলাশির যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল | Causes and Consequences of Battle of Plassey।
পলাশির যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল | Causes and Consequences of Battle of Plassey
❏ পলাশির যুদ্ধ (Battle of Plassey): ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দের ২৩ শে জুন মুর্শিদাবাদের তেইশ মাইল দূরে পলাশির প্রান্তরে ইস্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানি ও সিরাজের মধ্যে যুদ্ধ বাধে। নবাবের পক্ষে ছিল ১৮,০০০ অশ্বারোহী ও ৫০,০০০ পদাতিক সেনা এবং অন্যদিকে ইংরেজ পক্ষে ছিল ৮০০ ইংরেজ সেনা ও ২,২০০ দেশীয় সেনা। নবাবের সেনা সংখ্যা ইংরেজ পক্ষের তুলনায় অনেক বেশি হলেও এই যুদ্ধে নবাবের দুই সেনাপতি মীরজাফর ও রায়দুর্লভ যুদ্ধ না করে দূরে সরে থাকেন, কিন্তু নবাবের অন্য দুই বিশ্বস্ত সেনাপতি মীরমদানও মোহনলাল যুদ্ধ চালিয়ে যান। নবাবের জয় যখন সুনিশ্চিত, সেই সময় মীরমর্দান ইংরেজদের গোলার আঘাতে নিহত হন। এই খবরে সিরাজ বিচলিত হয়ে মীরজাফরের শরণাপন্ন হন ও তাঁর পরামর্শ প্রার্থনা করেন। বিশ্বাসঘাতক মীরজাফর সিরাজের সংকটপূর্ণ পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে তখনি যুদ্ধ বন্ধ করার পরামর্শ দেন।
সিরাজ যুদ্ধ বন্ধ করার আদেশ দিলে সঙ্গে সঙ্গে তাঁর পতন ঘটে। নবাব বাহিনী ছত্রভঙ্গ হয় এবং সিরাজ কোনোমতে প্রাণ নিয়ে মুর্শিদাবাদে ফিরে আসেন। ক্লাইভ যুদ্ধক্ষেত্রেই মীরজাফরকে নতুন নবাব বলে অভিনন্দিত করেন ও নজরানা দেন। ক্লাইভের সাহায্যে মিরাজাফর মুর্শিদাবাদের সিংহাসনে বসলে সিরাজ মুর্শিদাবাদ ছেড়ে পালিয়ে যান। কয়েকদিনের মধ্যেই রাজমহলের পথে সিরাজকে বন্দি করে মুর্শিদাবাদে নিয়ে আসা হয় এবং মিরজাফরের পুত্র মিরণের আদেশে তাঁকে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয় (২ রা জুলাই, ১৭৫৭)।
❏ পলাশির যুদ্ধের ফলাফল (Results of the Battle of Plassey):
প্রথমত, ১৭৫৭ সালে সংঘটিত পলাশির যুদ্ধকে প্রকৃত বা বড়ো যুদ্ধ বলা যায় না। কারণ যুদ্ধে হতাহতের সংখ্যা ও ব্যাপকতার দিক দিয়ে এই যুদ্ধকে একখণ্ড যুদ্ধ বলাই সংগত। ম্যালেসন -এর মতে, পলাশির যুদ্ধ চূড়ান্ত হলেও কখনও একে বড়ো যুদ্ধ হিসেবে বিবেচনা করা যায় না (“Plassey, though decisive , can never be considered as a great battle.")
দ্বিতীয়ত, পলাশির যুদ্ধের ফলে বাংলার শাসন ব্যবস্থাতেও কোনও মৌলিক পরিবর্তন ঘটেনি।
তৃতীয়ত, পলাশির যুদ্ধে নবাবি সেনার সঙ্গে কোম্পানির প্রকৃত শক্তি পরীক্ষা হয়নি। সেই কারণে ডঃ স্মিথ এই যুদ্ধকে‘ কামানের লড়াই’ বলে অভিহিত করেছেন। যুদ্ধের পরবর্তী সময়ে অনেকের ধারণা ছিল যে, নবাবি সেনা চেষ্টা করলে ইংরেজ শক্তিকে পরাজিত করতে পারতো।
চতুর্থত, পলাশির যুদ্ধের পর বাংলার নবাবকে বিভিন্ন খাতে ইংরেজ কোম্পানি ও ইংরেজ কর্মচারীদের প্রচুর অর্থ পুরস্কার দিতে বাধ্য করা হয়। পলাশির পরবর্তীকালে কোম্পানি বাংলায় যে অর্থ আদায় করতে থাকে তা ‘পলাশির লুণ্ঠন '(plassey plunder)' নামে পরিচিত। এর ফলে বাংলার অর্থনৈতিক কাঠামো বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে, দেশীয় বণিকদের সর্বনাশ হয় এবং বাংলার ব্যাবসাবাণিজ্যে ইংরেজ কোম্পানির একচেটিয়া কর্তৃত্ব স্থাপিত হয়।
❏ পলাশির যুদ্ধের পরোক্ষ ফলাফল: পলাশির যুদ্ধের প্রত্যক্ষ ফল ছাড়াও পরোক্ষ প্রভাবও কম ছিল না, যেমন :
(১) পলাশির যুদ্ধের ফলে ইংরেজরা প্রত্যক্ষভাবে না হলেও পরোক্ষভাবে বাংলার শাসন ক্ষমতায় প্রভাব বিস্তার করে। এর ফলে মীরজাফর সমস্ত ক্ষেত্রেই ইংরেজদের সমর্থনের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন।
(২) পলাশির যুদ্ধে জয়লাভের ফলে বাংলা থেকে ফরাসিরা বিতাড়িত হয় এবং তাদের মনোবল ভেঙে যায়। স্বাভাবিক ভাবেই তৃতীয় কর্ণাটকের যুদ্ধে ফরাসিদের শোচনীয় পরাজয় ঘটে।
(৩) পালশির যুদ্ধের গুরুত্ব প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে ঐতিহাসিক যদুনাথ সরকার বলেছেন যে, পলাশির যুদ্ধের সঙ্গে সঙ্গে ভারতে মধ্যযুগের অবসান হয় এবং আধুনিক যুগের সূচনা হয়।
আরও পড়ুন:- 1000 জেনারেল নলেজ প্রশ্ন উত্তর PDF
